আমরা সবাই প্রতিদিন নতুন কিছু জানতে চাই, নতুন কোনো গল্প শুনতে চাই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের চোখ থাকে খবরের কাগজে, টেলিভিশনে বা ইন্টারনেট স্ক্রিনে। কারণ প্রতিটি খবরই এক একটি জানালা খুলে দেয়, যেখানে আমরা পৃথিবীর বুকে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা, অভিজ্ঞতা আর ভাবনা দেখতে পাই। এই তথ্যগুলোই আমাদের মনকে সমৃদ্ধ করে তোলে, নতুনভাবে ভাবতে শেখায়।
কিন্তু কখনো কখনো এমনও হয়, যখন সব উৎস নীরব হয়ে যায়। কোনো নির্দিষ্ট খবর আমাদের সামনে আসে না, কোনো শিরোনাম মন কাড়ে না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কী করব? তথ্য যেখানে অনুপস্থিত, সেখানে কি নতুন কিছু তৈরি করা অসম্ভব? আসলে, এমন নীরবতাও হয়তো নতুন কিছু সৃষ্টির সুযোগ এনে দেয়, ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবনা শুরু করার একটি কারণ তৈরি করে।
একটি লেখার প্রাণ হলো তার বিষয়বস্তু। তথ্যগুলোই সেই লেখার ভিত্তি তৈরি করে, পাঠককে একটি নির্দিষ্ট পথে চালিত করে। যখন সেই ভিত্তিই অদৃশ্য থাকে, তখন লেখককে নিজেদের ভেতরের জগতে ডুব দিতে হয়। নিজের কল্পনা, অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষণের ওপর ভর করে তাকে একটি নতুন জগৎ তৈরি করতে হয়, যা পাঠকের মনে অনুরণন সৃষ্টি করবে।
আসলে, সংবাদ কেবল বাইরের ঘটনাপ্রবাহের সমষ্টি নয়; এটি মানুষের জীবন, তাদের স্বপ্ন, সংগ্রাম আর সফলতার প্রতিচ্ছবি। যখন কোনো নির্দিষ্ট সংবাদ আমাদের হাতে আসে না, তখন আমরা হয়তো জীবনের সাধারণ ঘটনাগুলো থেকে, চারপাশে ঘটে যাওয়া ছোট ছোট মুহূর্তগুলো থেকে নতুন অর্থ খুঁজে বের করতে পারি। এই ছোট ছোট পর্যবেক্ষণগুলোও এক অসাধারণ গল্পের উৎস হতে পারে।
তাই, খবর যখন অনুপস্থিত, তখন থেমে না গিয়ে বরং আমাদের ভেতরের সৃজনশীল শক্তিকে জাগিয়ে তোলা উচিত। প্রতিটি নীরবতাই নতুন সম্ভাবনার জন্ম দিতে পারে, নতুন একটি আলোচনার সূত্রপাত ঘটাতে পারে। হয়তো এই নীরবতা থেকেই উঠে আসবে এমন কোনো ভাবনা, যা পাঠককে অন্যভাবে ভাবতে শেখাবে, নতুন এক অভিজ্ঞতার স্বাদ দেবে। আসল কথা হলো, সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষা কোনো নির্দিষ্ট তথ্যের ওপর নির্ভরশীল নয়; এটি আমাদের অদম্য ইচ্ছার ফসল।