আজকের ডিজিটাল যুগে যখন প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সচেষ্ট, তখন বুটেক্সের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে একটি মৌলিক সেবার ডিজিটাল অনুপস্থিতি সত্যিই ভাবনার উদ্রেক করে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবার মতো একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ যদি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইটে অনুপস্থিত থাকে, তবে তা প্রশ্ন জাগায়। একটি সুসংগঠিত ওয়েবসাইটে ‘মেডিক্যাল অফিস’ বা ‘স্বাস্থ্যসেবা’ বিষয়ক কোনো সেকশন না থাকাটা শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্যপ্রাপ্তিতে বড় বাধা তৈরি করে।
কল্পনা করুন, একজন নতুন শিক্ষার্থী বা জরুরী মুহূর্তে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। তৎক্ষণাৎ কোথায় যোগাযোগ করতে হবে, কী ধরনের সেবা উপলব্ধ আছে, বা মেডিক্যাল অফিসের অবস্থান কোথায় – এই জরুরি তথ্যগুলো যদি সহজে ওয়েবসাইটে পাওয়া না যায়, তবে তার ভোগান্তি চরমে পৌঁছানো স্বাভাবিক। শুধুমাত্র ওয়েবসাইটেই নয়, এর পেছনের বাস্তব স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও নাকি নানা সীমাবদ্ধতা বিদ্যমান, যা শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও জটিল করে তুলছে।
ওয়েবসাইটে তথ্যের অভাব কেবল একটি ডিজিটাল ঘাটতি নয়, এটি বাস্তব সেবার দুর্বলতার প্রতিচ্ছবিও বটে। যখন একটি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাক্তার, নার্স বা প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র নিশ্চিত করতে পারে না, অথবা মেডিক্যাল সেন্টারটি কার্যকরভাবে পরিচালিত হয় না, তখন এই সীমাবদ্ধতাগুলো সরাসরি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। ছোটখাটো অসুস্থতা থেকে শুরু করে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায়, সঠিক সময়ে সঠিক সেবা না পাওয়া শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শিক্ষার্থীদের সুস্থ ও নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করা প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। শুধুমাত্র ক্লাসরুমে ভালো পাঠদানই যথেষ্ট নয়, তাদের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করাও আবশ্যক। বুটেক্সের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এই মৌলিক সেবার এমন নাজুক পরিস্থিতি সত্যিই অপ্রত্যাশিত। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এই ডিজিটাল ফাঁকফোকর পূরণ করে ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি সুবিন্যস্ত সেকশন যোগ করা এবং একইসাথে মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল – এই প্রবাদবাক্যটি কেবল ব্যক্তিগত জীবনের জন্য নয়, একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতার জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য। শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত না হলে তারা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা বিকশিত করতে পারে না। আশা করি, বুটেক্স কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন এবং অচিরেই ওয়েবসাইটের অভাব পূরণ করে, তার সাথে সঙ্গতি রেখে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়নে সচেষ্ট হবেন, যাতে বুটেক্সের শিক্ষার্থীরা একটি সুস্থ ও নিরাপদ পরিবেশে তাদের শিক্ষা জীবন চালিয়ে যেতে পারে।
উৎস: https://dailynayadiganta.com/printed-edition/9chk7MpAfsQ1/