দেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখতে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। প্রতি বছর হাজারো তরুণ উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান বিদেশে, যার মধ্যে ইউরোপ অন্যতম প্রধান গন্তব্য। তবে এই যাত্রাপথে প্রায়শই অনিয়মিত পদ্ধতির আশ্রয় নিতে গিয়ে অনেককে পড়তে হয় নানা জটিলতায়। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে এক নতুন সহযোগিতার বার্তা আশা জাগিয়েছে।
সম্প্রতি, গত ৬ই মে বাংলাদেশ ও ইতালির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তিটি মূলত অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও সুসংগঠিত করতে এবং অবৈধ পথে বিদেশ গমন বন্ধ করতে কাজ করবে। এর লক্ষ্য হলো একটি নির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে দিয়ে কর্মীদের ইতালিতে কাজের সুযোগ করে দেওয়া, যা উভয় দেশের জন্যই ফলপ্রসূ হবে।
বিশেষ করে, যারা দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন, তাদের জন্য এই পদক্ষেপটি বিশেষ অর্থ বহন করে। দুই দেশই এখন সেই অপেক্ষমাণ ভিসা আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এর ফলে একদিকে যেমন ভিসাপ্রাপ্তির অনিশ্চয়তা কমবে, তেমনি অন্যদিকে বৈধভাবে ইতালিতে যাওয়ার পথ আরও প্রশস্ত হবে।
এই ধরনের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি শুধু ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজ করে না, বরং অভিবাসন ব্যবস্থায় একটি মানবিক ও নৈতিক ভিত্তি স্থাপন করে। নিয়মিত নিয়োগের পথ উন্মুক্ত হওয়ায় মানবপাচার ও অনিয়মিত অভিবাসনের ঝুঁকি অনেক কমে আসবে। এটি বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করবে এবং ইতালির শ্রমবাজারে বৈধ শ্রমিকের জোগান দেবে, যা উভয় অর্থনীতিতেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইতালি সরকারের এই ইতিবাচক উদ্যোগ এবং বাংলাদেশের সাথে তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা নিঃসন্দেহে হাজার হাজার পরিবারের মুখে হাসি ফোটাবে। এটি ভবিষ্যতের অভিবাসন চুক্তির জন্য একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, যেখানে কর্মীদের নিরাপত্তা ও অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়িত হয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও গতি আনবে।