রাজনৈতিক হানাহানি: সুস্থ গণতন্ত্রের পথে অন্তরায়

সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও হানাহানি ও আক্রমণের ঘটনা আমাদের হতাশ করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ওপর হামলা, বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী দলের (এনসিপি) নেতাদের প্রতি আক্রমণের যে খবর আমরা পেয়েছি, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী এমন কার্যকলাপ সত্যিই নিন্দনীয়।

সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, এই আক্রমণগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল। এমনকি একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, মির্জা ফখরুলও হামলার শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি সভ্য সমাজে, যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক আন্দোলনের সুযোগ থাকার কথা, সেখানে শারীরিক আক্রমণ কোনো সমাধান হতে পারে না। সংশ্লিষ্ট মহলের পক্ষ থেকে এমন ঘটনার নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারকেই পুনর্ব্যক্ত করে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান। যখন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শারীরিক আক্রমণের মাধ্যমে ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়, তখন তা কেবল ব্যক্তি আক্রমণেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং গোটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই কলুষিত করে। এতে সাধারণ মানুষের মনেও রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলের প্রতি অনাস্থা জন্মায়।

এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য। যেই বা যারা এই ধরনের সহিংস কার্যকলাপে জড়িত, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোরও উচিত, তাদের কর্মীদের সহিংসতা থেকে বিরত রাখা এবং এমন ঘটনার স্পষ্ট নিন্দা জানানো। কেবলমাত্র সদিচ্ছা এবং নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আমরা এই অসুস্থ প্রবণতা থেকে মুক্তি পেতে পারি।

আমরা চাই, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সুস্থ প্রতিযোগিতা, গঠনমূলক সমালোচনা এবং আলোচনার সংস্কৃতি ফিরে আসুক। সহিংসতা ও হানাহানি কখনোই কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে না, বরং তা কেবল বিভেদ ও অস্থিরতা বাড়ায়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব, যা একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য।

মূল সূত্র: https://www.thedailystar.net/opinion/editorial/news/attacks-ncp-leaders-disgraceful-3993676

সর্বশেষ লেখা