বাংলাদেশে কর্ম রত সরকারি-বেসরকারি সব চিকিৎসকের মধ্যেই ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের প্রবণতা লক্ষণীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ প্রাইভেট প্রাকটিসের মাধ্যমে পর্যাপ্ত আয় নিশ্চিত করে শহরাঞ্চলে বসবাস করার স্থায়ী ব্যবস্থা করা যায়। প্রাইভেট প্রাকটিসের সুযোগ না থাকায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলিতে এবং ফরেন্সিক মেডিসিন ও এনেসথেসিয়া বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য আগ্রহী চিকিৎসকের সংখ্যা কম। তাই এই বিষয়গুলিতে শিক্ষক ও চিকিৎসক সঙ্কট প্রকট এবং সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানও কঠিন হয়ে পড়েছে।

সরকারি চিকিৎসকরা গ্রামাঞ্চলে ২ বছর সরকারি চাকরি করলেই যে কোন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। উত্তীর্ণ হলে সবেতন প্রেষণ নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। আগে কেবলমাত্র বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজীশিয়নস ও সার্জনস উচ্চতর ডিগ্রী প্রদান করতো। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিতে হতো তত্কালীন আইপিজিএমআর-এ।

আইপিজিএমআর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হবার পর এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্বতন্ত্রভাবে উচ্চতর ডিগ্রী দেয়া হয়। এছাড়া সকল স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পূরণো আটটি মেডিকেল কলেজ থেকেও উচ্চতর ডিগ্রী প্রদান শুরু হয়েছে। নূতন নূতন অনেক বিষয়ে উচ্চতর কোর্স খোলা হয়েছে। ফলে আসন সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বহু সংখ্যক চিকিৎসক একই সংগে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন।

প্রত্যেক বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার মেয়াদ এক নয়। ন্যূনতম ১ থেকে ৬ বছর পর্যন্ত হতে পারে। গড়ে সাড়ে তিন বছর। অর্থাৎ একজন চিকিৎসক সরকারি চাকরি থেকে প্রেষণে গেলে গড়ে সাড়ে তিন বছর উচ্চ শিক্ষায় থাকেন। এভাবে যে কোন সময় প্রায় ৪ হাজার সরকারি চিকিৎসক উচ্চ শিক্ষায় রত থাকেন।  গ্রামাঞ্চলে কর্মরত চিকিৎসকরাও মূল কাজে একান্ত মনোযোগ না দিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। প্রেষণে থাকা এবং উচ্চ শিক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ উভয় কারণে গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসকের অভাব দেখা যায়।

সেজন্য উচ্চ শিক্ষার জন্য কী কী শর্ত পূরণ করতে হবে তার সুনির্দিষ্ট, সুস্পষ্ট ও স্বচ্ছ নীতিমালা থাকতে হবে। এমন কি বিষয়-ভিত্তিক আগ্রহ দেখে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ভর্তি করা যেতে পারে। যে বিষয়গুলি ভর্তির যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে তা হলো: জ্যেষ্ঠ্যতা, উপজেলায় কাজের অভিজ্ঞতা, অফিস উপস্থিতির ভালো রেকর্ড, কাজের মান ও পরিমাণ, রোগী ও সহকর্মীদের সাথে ব্যবহার, সততা ও চরিত্রের দৃঢ়তা, গবেষণায় আগ্রহ, বিষয় ভিত্তিক উপস্থাপনা, বৈজ্ঞানিক সভা সেমিনারে অংশগ্রহণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আগ্রহ ইত্যাদি। 

দেশের চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়ক উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ভর্তির আসন সংখ্যা পরিকল্পনা মাফিক নির্ধারণ করা হয়নি। যেসব বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিতে চিকিৎসকরা বেশী আগ্রহী সেসব বিষয়ে আসন সংখ্যা বেশী। ফলে কিছু কিছু ক্লিনিক্যাল বিষয়ে মঞ্জুরিকৃত পদের চেয়ে বহু গুণ বেশী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি হয়েছে। পদ না থাকায় পদোন্নতির সুযোগ কমে এসেছে। অপর দিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলিতে এবং ফরেন্সিক মেডিসিন ও এনেসথেসিয়া বিষয়ে উচ্চ শিক্ষায় ডিগ্রীপ্রাপ্ত শিক্ষক ও চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না।

সর্বশেষ লেখা

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে প্রতি বছর চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন উচ্চতর কোর্সে প্রয়োজন অনুযায়ী আসন সংখ্যা নির্ধারণ করে দিতে হবে।
বাংলাদেশে কর্ম রত সরকারি-বেসরকারি সব চিকিৎসকের মধ্যেই ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের প্রবণতা লক্ষণীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ
সরকারি চিকিৎসাঙ্গনে চাকুরীরত চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ডবয়, আয়া, কর্মচারী কেউ সন্তুষ্ট নন। কারণ তাদের বেতন ভাতা অপর্যাপ্ত। অমানুষিক পরিশ্রম।
যথাযথ প্রতিরোধ মূলক কর্মসূচি না থাকায় বাংলাদেশে কিডনি ও ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিডনি রোগীদের নিয়মিত ডায়ালাইসিস প্রয়োজন
দেশে অসংখ্য সরকারি স্বাস্থ্য স্থাপনা আছে। গ্রাম পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে রাজধানী শহরের অতি-বিশেষায়িত হাসপাতাল পর্যন্ত। গ্রামের মানুষের
সহজ কথায় বলতে গেলে পৃথিবীর যে কোন দেশের নাগরিকই তার প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে যখন প্রয়োজন তখনই নিশ্চিতভাবে