চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চ শিক্ষার আসন সংখ্যা প্রমিত করতে হবে

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে প্রতি বছর চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন উচ্চতর কোর্সে প্রয়োজন অনুযায়ী আসন সংখ্যা নির্ধারণ করে দিতে হবে। নীচের চারটি চার্টে বর্তমানে সরকারি স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদের অনুপাত দেখানো হয়েছে স্পষ্টতমই এসব বিষয়ে পদগুলির পিরামিড-অনুপাত বজায় রাখা হয়নি।

সরকারি চিকিৎসকদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রয়োজন অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে

বাংলাদেশে কর্ম রত সরকারি-বেসরকারি সব চিকিৎসকের মধ্যেই ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের প্রবণতা লক্ষণীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ প্রাইভেট প্রাকটিসের মাধ্যমে পর্যাপ্ত আয় নিশ্চিত করে শহরাঞ্চলে বসবাস করার স্থায়ী ব্যবস্থা করা যায়। প্রাইভেট প্রাকটিসের সুযোগ না থাকায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলিতে এবং ফরেন্সিক মেডিসিন ও এনেসথেসিয়া বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য আগ্রহী চিকিৎসকের সংখ্যা কম। তাই এই বিষয়গুলিতে শিক্ষক ও চিকিৎসক সঙ্কট প্রকট এবং সংশ্লিষ্ট সেবা প্রদানও কঠিন হয়ে পড়েছে।

একজন সেবা প্রদানকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমস্যা কী?

সরকারি চিকিৎসাঙ্গনে চাকুরীরত চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ডবয়, আয়া, কর্মচারী কেউ সন্তুষ্ট নন। কারণ তাদের বেতন ভাতা অপর্যাপ্ত। অমানুষিক পরিশ্রম। যোগ্যতা, দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, কাজের মান ও পরিমাণের মূল্যায়ন নেই। রাজনীতি, দল বাজি, ঘুষ, তৈলমর্দন ছাড়া পদোন্নতি, ভালো পদায়ন হয় না। আত্ম মর্যাদা চরম ভাবে লঙ্ঘিত হয়।

যারা বেশী কাজ করেন তারাই বঞ্চিত হন বেশী

যারা সবচেয়ে বেশী কাজ করেন, যারা গ্রামে বছরের পর বছর কাজ করেন, যাদের মামা চাচা বা দলীয় পরিচয় নাই তারাই বঞ্চিত হন সবচাইতে বেশী। আবার নিজের রাজনৈতিক দল ক্ষমতা হারালে চরম সর্বনাশ নেমে আসে জীবনে। যোগ্যতা দক্ষতা যাই থাকুক না কেন পোস্টিং দেয়া হয় দূরবর্তী বা দুর্গম এলাকায়। সেখানে কাজের সুযোগ থাক বা না থাক। অবশ্য অফিস কামাই করে দিনের পর দিন থাকাও যায়। তারা বেতন পান। কিন্তু দেশ বা রোগীরা তাদের সেবা পায় না। এতে নীতি-নির্ধারকদের কিছু যায় আসে না।

কর্মস্থলে নিরাপত্তা ও সুযোগের অভাব

সেবাদানকারীরা কর্মস্থলে নিরাপত্তার অভাব, ভালো আবাসন, সন্তান সন্ততির লেখা পড়ার সমস্যার কথাও বলে থাকেন।

দূরবর্তী অঞ্চলে কাজ করার জন্য প্রণোদনা নেই

দূরবর্তী ও দুর্গম অঞ্চলে কাজ করার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই বা থাকলেও তা এতই যৎসামান্য যে কাউকে আকৃষ্ট করে না।

অসংক্রামক রোগ বাড়ছে

যথাযথ প্রতিরোধ মূলক কর্মসূচি না থাকায় বাংলাদেশে কিডনি ও ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিডনি রোগীদের নিয়মিত ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। ক্যান্সার রোগীদের কেমোথেরাপি বা রেডিও থেরাপি চিকিৎসা সহজ প্রাপ্য নয় এবং অত্যন্ত ব্যয় বহুল। হার্ট ও দীর্ঘস্থায়ী শ্বাস কষ্টের রোগীও বাড়ছে। এ ধরণের সব রোগের চিকিৎসাই রোগ নির্ণয়ের পর আমৃত্যু চলে। ব্যয়বহুল হওয়ায় পরিবারগুলি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে অপরিসীম সমস্যায় পড়ে।